বেঁচে নেই সেই বৃষ্টি, মিললো মরদেহের সন্ধান

ডেস্ক রিপোর্ট- বড় ভাই সাঈদুল ইসলাম সানির আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্য হয়েছে। গার্হস্হ্য অর্থনীতি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জোহরা বৃষ্টি (২১) আর কোনো দিনই ফিরবেন না পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সহপাঠী কিংবা প্রিয় ক্যাম্পাসে।

ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনে পুড়ে অঙ্গার হওয়া ৯ জন পুরুষ ও দুই নারীর মরদেহ শনাক্ত করেছে সিআইডি। এর মধ্যে একটি মরদেহ ফাতেমা তুজ জোহরা বৃষ্টির। অপরটি নাসরিন জাহানের।

বুধবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ১১ মরদেহ শনাক্তের বিষয়টি জানিয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে দুই নারীর পরিচয় মিলেছে তারা নিখোঁজ দুই বান্ধবী কিনা সেটি বলতে পারব না। তবে দাবিদার পরিবার যে নাম দিয়েছে সেই নাম আমরা প্রকাশ করেছি।

তিনি বলেন, নিহতের পর ১৯ জনের মরদেহ ও একটি বিচ্ছিন্ন হাত পাওয়া যায়। এর বিপরীতে ৪৮ জন দাবিকারীর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২৩ জনের সঙ্গে ১১টি মরদেহের নমুনা মিলে যায়। বাকি ৮ বা ৯টি মরদেহের বিপরীতে ২৫ জন দাবিদার থাকল। যা শনাক্ত করতে ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগতে পারে। শনাক্তকৃত ১১টি মরদেহের পরিচয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু ঘটনাটি নিয়ে মামলা হয়েছে। তাই আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে পুলিশ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে। আমরা প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট থানার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছি। ওই কর্মকর্তা আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে মরদেহগুলো হস্তান্তরের প্রক্রিয়া গ্রহণ করবেন।

এর আগে চকবাজারের ঘটনার পর ঘটনাস্থলে নিহত ৬৭টি মরদেহের বিপরীতে মোট ২৫৭টি নমুনা (রক্ত, টিস্যু, হার ও বাক্কাল সোয়াব) সংগ্রহ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে আগুনের সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ঘটনাস্থলেই মোট ৬৭ জন মারা যান। আহত ও দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৪১ জন। তাদের মধ্যে আরও চারজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭১ জন।